রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ অপরাহ্ন
৭১সংবাদ২৪.কম-ডেস্কঃ
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ঘনিরামপুর বড়গোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলিয়ার রহমানের পদত্যাগের দাবিতে স্কুল নিকটস্থ রংপুর টু সৈয়দপুর মহাসড়ক অবরোধ করে ২ ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছেন উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টা থেকে শুরু ২ ঘন্টা ব্যাপী স্কুল নিকটস্থ রংপুর টু সৈয়দপুর মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. অলিয়ার রহমানের দুর্নীতি ও পরিবারতান্ত্রিক নিয়োগের মূলহোতা অ্যাখ্যা দিয়ে মানববন্ধন করেন। অবরোধ চলাকালিন আঞ্চলিক মহাসড়কের উভয় পাশে হাজার অধিক ছোট-বড় যানবাহন আটকা পড়লে প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থান কর্মসূচীতে পুলিশের উপস্থিতিতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যানচলাচল ও যাত্রীসাধারণ।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুবেল রানা ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে প্রাথমিক আশ্বস্ত করে তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছ থেকে কারনদর্শানোর জবাবের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠণ করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তবে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে অনড় অবস্থান। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান করে প্রতিষ্ঠান থেকে চলে যান।
পরে বেলা আনুমানিক ৩.৩০টায় দ্বিতীয় দফায় শিক্ষার্থীরা আবারো মহাসড়ক অবরোধ করলে রংপুর জেলা পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে এসে পূনরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ ও সুধীমহলের সহযোগীতায় শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে পূরণের আশ্বস্ত করে তাদেরকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেন। পরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মো. আলিয়ার রহমানের কাছে তার বিরুদ্ধে আনিত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা যেসব অভিযোগ এনেছে, তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পরে বলছি বলে কলটি কেটে দেন। পূনরায় যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি আর মোবাইল ফোন রিসিভ করেন নাই।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেহেনা ইয়াসমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার ইতোমধ্যে কারনদর্শানোর চিঠি দিয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের জবাবের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন। শিক্ষার্থীদের দাবি ন্যায্য হলে তারা সঠিক বিচার পাবে এ বিষয়ে আমরা আইনানুগ ভাবে সার্বিক ব্যাবস্থা গ্রহণে সচেষ্ঠ থাকবো।
উক্ত বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুবলে রানা বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে প্রথমত. কারণদর্শানোর নোটিশ করেছি। কারনদর্শানোর জবাবের পর তদন্ত কমিটি গঠণ ও তদন্ত চলাকালিন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত কারা হবে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আরো তিন জন শিক্ষকের নামে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক বিষয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আশাকরি অল্প সময়ের মধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দাবি সংক্রান্ত বিষয় সমূহের সুষ্ঠ সমাধান করা হবে।
উল্লেখ্য যে, প্রতিষ্ঠানটিতে বিগত সরকারে আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আলিয়ার রহমান তার নিজ স্ত্রী, ভাই, ভাতিজা ও ভাতিজার স্ত্রী সহ নিজ পরিবারের মোট ৮ জনকে গোপনে সু-কৌশলে নিয়োগ দেন। এছাড়াও প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল বাবদ প্রতি মাসে ৫০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০০ জন।